ভূমিকাঃ
বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারনে প্রতি বছর কোন না কোন দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। বন্যা, খরা, জলোচ্ছ্বাস, ভূমি, নদী ভাঙ্গন, আর্সেনিক দূষণ এবং সম্প্রতি সারা বিশ্ব ব্যাপি করোনা ভাইরাস এর প্রাদুর্ভাব সমস্ত মানব জাতিকে সবদিক থেকে ধ্বংসের মুখে দেয়। এতে আমাদের মত কৃষি প্রধান ও দুর্বল অর্থনৈতিক অবকাঠামো সম্বলিত একটি ঘন জনবসতিপূর্ণ দেশের জন্য উপরোক্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগ সীমাহীন দুর্ভোগ নিয়ে আসে এবং দেশের অগ্রগতিকে বারংবার ব্যাহত করে। এ দুর্যোগ ধ্বংসলীলা এবং ক্ষয়ক্ষতি এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায় যখন বেসামরিক কর্তৃপক্ষের সীমিত সম্পদ এবং শম্পা সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী দ্বারা দুর্যোগ মোকাবেলা করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই আমাদের দুর্যোগ মোকাবেলা করতে দুর্যোগ ও দুর্যোগের পর্যায় সমূহ এবং বিভিন্ন পরিস্থিতি সম্পর্কে নিজেরা জানা এবং অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে জানানো অত্যাবশ্যক।
দুর্যোগ ও দুর্যোগের ব্যবস্থাপনাঃ
ক) দুর্যোগঃ
দুর্যোগ প্রাকৃতিক বা মানুষের দ্বারা সংগঠিত কোন ঘটনা যা চলমান স্বাভাবিক সমাজ জীবনকে গভীরভাবে ব্যাহত করে এবং মানব সম্পদ ও পরিবেশের দ্রুত ক্ষতি সাধন করে, যার মোকাবেলায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সরকারী সকল সংগঠনের সামাজিক দায়িত্ব রয়েছে। তাই সংগঠনগুলির দুর্যোগ সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা বাঞ্ছনীয়।
খ) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাঃ
দুর্যোগ প্রতিরোধ, মোকাবেলা ও ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসের জন্য গৃহীত পরিকল্পনা, প্রস্তুতি , মোকাবেলা করা এবং পরবর্তী পুনর্বাসন সংক্রান্ত কর্মকান্ডকে সামগ্রিকভাবে বলা হয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন সংগঠনঃ
ক) দুর্যোগ, ত্রাণ ও পূর্ণবাসন মন্ত্রনালয়
খ) বি.এন.সি.সি. সদর দপ্তর
গ) জেলা প্রশাসক
ঘ) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিব
ঙ) থানা নির্বাহী কর্মকর্তা
চ) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারগণ।
ছ) ফায়ার সার্ভিস
জ) উপজেলা স্বাস্থ্য পরিষদ
ঝ) জেলা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
ঞ) রেড ক্রিসেন্ট
ট) স্কাউট ও অন্যান্য সেচ্ছাসেবী সংগঠন
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার পর্যায়সমূহঃ
প্রাক দুর্যোগ পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাঃ
ক) প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমন সব এলাকা চিহ্নিত করা এবং তথ্যাদি সংগ্রহ করা।
খ) সংশ্লিষ্ট বি.এন.সি.সি সদর দপ্তরের নির্দেশ অনুযায়ী সকল সৈনিকদের ত্রাণ ও উদ্ধার পুনর্বাসন বিষয়ে বিশেষ নির্দেশনা (ব্রীফিং) প্রদান করা।
গ) বি.এন.সি.সি সদর দপ্তর হতে সতর্কীকরণ আদেশ প্রাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে অধীনস্থ সব রেজিমেন্ট সমূহে সতর্কীকরণ আদেশ জারি করা।
ঘ) বেসামরিক কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা।
ঙ) ত্রান ও উদ্ধার কার্যের জন্য প্রয়োজনীয় বিশেষ সরঞ্জাম সংগ্রহ, রক্ষণাবেক্ষণ এবং প্রয়োজনে তা মেরামত করা।
চ) বি.এন.সি.সি সদর দপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী সকল স্থানে দুর্যোগকালীন সময়ে ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হতে পারে তাই সকল স্থানে পূর্ব হতেই সৈন্য মোতায়েন করা।
ছ) যে সকল স্থানে সেনা মোতয়েন করা হয় বা হতে পারে সে সকল স্থানে রশদ সরবরাহের বা সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা।
জ) রেজিমেন্ট সমূহে দুর্যোগ নিয়ন্ত্রন কক্ষ স্থাপন করা। দায়িত্বপূর্ণ জেলা সদরের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা।
ঝ) যে সকল স্থানে সৈনিকদের জন্য ক্যাম্প করা যেতে পারে সে সকল স্থানের তথ্য সংগ্রহ করা এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা।
দুর্যোগকালীন পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাঃ
ক) বিএন.সি.সি সদর দপ্তরের নির্দেশে সৈনা মোতায়েন করা । যদি প্রাক দুর্যোগ পর্যায়ে মোতায়েন করা হয়ে থাকে, জেলা পর্যায়ে দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন ও যোগাযোগ স্থাপন। দুর্গত জনগণকে উপদ্রুত এলাকা হতে উদ্ধার, নিরাপদ আশ্রয়ে স্থানান্তর এবং সকল আশ্রয় কেন্দ্র পূর্ব হবে চিহ্নিত করা।
প্রশাসনিক কার্যাবিধিঃ
ক) খাদ্য।
খ) পানি।
গ) ক্যাম্প।
ঘ) অস্ত্র গোলাবারু
ঙ) অস্থায়ী শিবির/ ক্যাম্প।
চ) যানবাহন।
ছ) জ্বালানী।
জ) সরঞ্জামাদি।
ঝ) বসবাস স্থান।
ঞ) মূল নীতিমালা।
ট) ত্রাণ শিবির।
এস ও এস ফরম নিম্নরূপঃ
ক্রমিক নং | নাম |
০১। | ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়ন (সংখ্যা) |
০২। | ক্ষতিগ্ৰন্ত লোক সংখ্যা |
০৩। | বিধ্বস্ত বাড়ি (আনুমানিক সংখ্যা) |
০৪। | মৃত (আনুমানিক সংখ্যা) |
০৫। | সন্ধান ও উদ্ধার |
০৬। | প্রাথমিক চিকিৎসা |
০৭। | পানীয় জল |
০৮। | তৈরি খাবার |
০৯। | জামা কাপড় |
১০। | জরুরী আশ্রয় |
উপসংহারঃ
সর্বোপরি প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় বি.এন.সি.সি সদর দপ্তরের নির্দেশ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং সংশ্লিষ্ট সদর দপ্তরকে অবহিত করা অত্যাবশ্যক।