অস্ত্র সম্বন্ধীয় বিবিধ সংজ্ঞা
ভূমিকা:
অস্ত্র এবং গুলি পৃথক পৃথক ভাবে কতকগুলি বিশেষ গুণাবলী সম্পন্ন । আমরা বিএনসিসি’র একজন সদস্য হয়েও যদি আমাদের নিজ নিজ অস্ত্রের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এবং বিশেষ ভাবে গুলির গতিবিধি, অস্ত্রের ব্যবহার এবং গুলির কার্যকারীতা সম্পর্কে সম্যক ধারণা না রাখি তবে যুদ্ধক্ষেত্রে অস্ত্র ও গুলির সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে সাফল্য অর্জন করতে পারব না । তাই আমাদেরকে অস্ত্র ও গুলি এবং ভূমিতে তাদের ব্যবহার ও প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে অস্ত্র সম্বন্ধীয় বিবিধ সংগাগুলি ভাল ভাবে রপ্ত করতে হবে।
উদ্দেশ্য:
এই পাঠের উদ্দেশ্য হচ্ছে অস্ত্র প্রশিক্ষণ সম্পৰ্কীয় বিভিন্ন সংজ্ঞার বিবরণ দেয়া ।
অস্ত্র সম্পর্কীয় সংজ্ঞা:
১। রাইফ্লিং : অস্ত্রের ব্যারেলের ভিতরের ঘূর্ণায়মান বা পেঁচানো খাঁজ বা কাটা দাগকে রাইফ্লিং বলা হয় । নিচু বা গর্তের অংশকে বলা হয় গ্রুভস্ এবং উঁচু অংশকে বলা হয় ল্যান্ড ।
২। ক্যালিবার : গ্রুভসের গভীরতাকে বাদ দিয়ে একটি ব্যারেলের ভিতরের অংশ বা বোরের ব্যাসকে (Diameter) বা বিপরীত দুই ল্যান্ডের দূরত্বকে ক্যালিবার বলা হয়।
৩। টুইস্ট (মোচড় বা প্যাচ) : যে দূরত্বের মধ্যে রাইফ্লিং এর গ্রুভস্ একটি সম্পূর্ণ চক্র সম্পন্ন করে তাকে টুইস্ট বলে।
৪। ব্যারেলের এ্যাকসিস বা অক্ষ: বোরের ঠিক মাঝখানে ব্রিচ হতে মাজেল পর্যন্ত যে কাল্পনিক সরল রেখা সৃষ্টি হয় তাকে ব্যারেলের এ্যাকসিস বলে।
৫। সাইটের লাইন বা রেখা: ফায়ারারের চক্ষু হতে সাইটের মধ্য দিয়ে লক্ষ্যবস্তুর লক্ষ্যবিন্দু পর্যন্ত সৃষ্ট কাল্পনিক সরল রেখাকে বলা হয় সাইটের লাইন বা রেখা।
৬। ফায়ারের লাইন বা রেখা: একটি অস্ত্রের মাজেল থেকে লক্ষ্যবস্তুর যে সোজা দিক থাকে তাকে ফায়ারের লাইন বা রেখা বলে।
৭। মাজেল ভেলোসিটি: ফায়ারকৃত বুলেট অথবা প্রোজেক্টাইল যে গতির নামে অস্ত্রের মাজেল ত্যাগ করে তাকে মাজেল ভেলোসিটি বলে।
৮। কোয়াড্রেন্ট উচ্চতা বা এলিভেশন: একটি অস্ত্র ফায়ারের পূর্বে স্থাপনের পর ব্যারেলের এ্যাকসিস ভূমির সমান্তরালের সাথে যে কোণের সৃষ্টি করে তাকে কোয়াড্রেন্ট উচ্চতা বা এলিভেশন বলে।
৯। ট্যানজেন্ট এলিভেশন বা উচ্চতা: একটি অস্ত্র ফায়ারের পূর্বে স্থাপন করার পর ব্যারেলের এ্যাকসিসের সাথে সাইটের লাইন যে কোন সৃষ্টি তাকে ট্যানজেন্ট উচ্চতা বলে।
১০। জাম্প বা লম্ফ: ফায়ারিং এর পূর্বে একটি খাড়া সমতলে ব্যারেলের অক্ষ এবং প্রস্থানের রেখার মধ্যে সৃষ্ট কোণকে লম্ফ বলা হয়। যদি প্রস্থানের রেখা ব্যারেলের অক্ষের উপরে হয় তাহলে লম্ফ পজেটিভ এবং যদি সেটা ব্যারেলের অক্ষের নীচে হয় তাহলে লম্ফ নেগেটিভ।
১১। অবচুরেশন: একটি গুলি ফায়ার করার পর চেম্বার থেকে গ্যাসের অনাকাঙ্খিত নির্গমণকে বাধা দেয়ার জন্য অস্ত্রের ব্রীচ বন্ধ হওয়াকে অবচুরেশন বলে।
১১। ঝুলন্ত বা হ্যাং ফায়ার: যখন ট্রিগার চাপ দেয়া এবং চেম্বার থেকে প্রোজেক্টাইল পরিত্যাগ করার মধ্যবর্তীকালীন সময় প্রচলিত সময়ের চেয়ে বেশী হয় তখন তাকে ঝুলন্ত ফায়ার বলে। এটা অনেক কারণে হতে পারে, তার মধ্যে প্রধান হলো প্রাইমারের ত্রুটিপূর্ন কাজ অথবা প্রোপেলেন্টের ত্রুটিপূর্ন প্রজ্জলন।
১২। বুকিং অফ: একটি অস্ত্রের অত্যাধিক গরম চেম্বারের ভিতরে কোন কার্টিজের স্বয়ংক্রিয় প্রজ্জ্বলনকে বুকিং অফ বলা হয়।
১৩। রানএ্যাওয়ে গান: যখন কোন স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ফায়ারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে অনবরত ফায়ার করতে থাকে তখন তাকে রানএ্যাওয়ে গান বলা হয়।
১৪। খোলা সাইট: সাধারনতঃ হাতিয়ারের মাজেলের উপরে কিংবা সম্মুখ ভাগে বা ফ্রন্ট সাইট থাকে এবং ফায়ারের চোখের নিকটবর্তী থাকে ব্যাক সাইট। এ দুটি সাইটকেই লক্ষ্যবস্তুতে মিলাতে হয় । এই সাইটদ্বয়কে খোলা সাইট বলা হয় ।
১৫। অপটিক্যাল সাইট: এ সাইট ব্যবহার করলে ফায়ারার লক্ষ্যবস্তুর বর্ধিত প্রতিচ্ছবি দেখতে পায়। এটা সাধারণতঃ একটি সরল রেখা দূরবীক্ষণ যন্ত্র যা লক্ষ্যবস্তুকে দুই থেকে চার গুন বড় করে ।
১৬। রিকয়েলিং: নিউটনের গতির তৃতীয় নিয়মের উপর ভিত্তি করে যখন বুলেট মাজেল ত্যাগ করে, তখন ঐ একই শক্তিতে রাইফেলও পিছনের দিকে ধাক্কা লাগে। ধাক্কার ফলে রাইফেলের এই পিছনের দিকে আসাকে রিকয়েলিং বলে।
১৭। সাইট রেডিয়াস: একটি অস্ত্রের সাইটদ্বয়ের মধ্যকার দূরত্বকে সাইট রেডিয়াস বলা হয়।
প্রোজেক্টাইলের গতি সম্পর্কীয় সংজ্ঞা:
১। ট্রেজেক্টরি: একটি বুলেট ফায়ার করার পর বায়ু মাধ্যমে উড্ডয়নকালে যে বক্র পথ অতিক্রম করে তাকে ট্রেজেক্টরি বলে।
২। প্রস্থান রেখা (লাইন অব ডিপারচার): মাজেল ত্যাগ করার সময় একটি প্রোজেক্টাইল যে অভিমুখে ধাবিত হয় সে দিককে বলা হয় প্রস্থান রেখা।
৩। ভারটেক্স বা কালমিনেটিং পয়েন্ট: ট্রেজেক্টরির উপর যে বিন্দু সাইটের লাইট থেকে সবচেয়ে উপরে অবস্থিত তাকে ভারটেক্স বলে। এটা অর্ধেকের চেয়ে অল্প দূরে অবস্থিত।
৪। এ্যাংগেল অব প্রোজেকশন: ট্রেজেক্টরির কোন বিন্দুর এ্যাংগেল অব প্রোজেকশন হচ্ছে ঐ বিন্দুতে সৃষ্ট প্রস্থান রেখা এবং সাইটের লাইনের মধ্যবর্তী কোণ।
৫। এ্যাংগেল অব ডিসেন্ট: ট্রেজেক্টরির কোন বিন্দুর এ্যাংগেল অব ডিসেন্ট হচ্ছে ঐ বিন্দুতে সৃষ্ট পৌঁছার রেখা এবং সাইটের রেখার মধ্যবর্তী কোণ।
৬। প্রথম ধরা (ফাস্ট ক্যাচ): যে বিন্দুতে একটি বুলেট কোন লক্ষ্যবস্তুর সবচেয়ে উপরিভাগে আঘাত করে তাকে প্রথম ধরা বলে।
৭। প্রথম গ্রেজ (ফাস্ট গ্রেজ): যে বিন্দুতে বুলেট তার ট্রেজেক্টরিতে প্রথম ভূমিতে আঘাত করে তাকে প্রথম গ্রেজ বলে।
৮। বিপদজনক স্থান (ডেঞ্জারাস স্পেস): একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে প্রথম ধরা এবং প্রথম গ্রেজ এর মধ্যবর্তী জায়গাকে বিপদজনক স্থানে বলে। বিপদজনক স্থান নিম্নলিখিত কারণগুলির উপর নির্ভরশীলঃ-
(১) ভূমি থেকে অস্ত্রের উচ্চতা।
(২) দূরত্ব।
(৩) লক্ষ্যবস্তুর উচ্চতা।
(8) অস্ত্রের ট্রেজেক্টরির পরিমাণ কতখানি।
(৫) ভূমির আকার।
দূরত্ব যত বেশী হবে বিপদজনক স্থান তত কম হবে। নিম্নলিখিত কারনে বিপদজনক স্থান বেশী হয়ঃ-
(১) অস্ত্র লক্ষ্যবস্তুর যত নিকট হবে।
(২) অস্ত্র ভূমির যত নিকট হবে।
(৩) লক্ষ্যবস্ত যত লম্বা / উঁচু হবে।
(৪) ট্রেজেক্টরি যত নীচু হবে।
(৫) ভূমির ঢালু অংশ বুলেটের এ্যাংগেল অব ডিসেন্টের সাথে যত নিকটে মিলে যায়।
৯। রিকোশে: যখন কোন বুলেট শক্ত ভূমি অথবা অন্য কোন বস্তুর দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হবার পর তার দিক পরিবর্তন করে এবং ভ্রমন অব্যাহত রাখে তখন তাকে রিকোশে বলে।
১০। স্পিনিং: একটি বুলেটের ব্যারেল ত্যাগ করার সময় পাক খাওয়া গতিকে স্পিনিং বলে।
১১। ফায়ারকে কেন্দ্রীভূতকরণ (কনসেনট্রেশন অব ফায়ার): যখন কোন লক্ষ্যবস্তুর উপর একাধিক অস্ত্র বা একটি স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দ্বারা পর্যায়ক্রমে ফায়ার করা হয় তখন তাকে ফায়ারের কেন্দ্রীভূতকরণ বলে।
১২। ড্রিফট: কোন প্রজেক্টাইল তার মূল গতির সাথে সমকোনে পার্শ্বে অবস্থান পরিবর্তন করলে তাকে ড্রিফট বলে । এটা ঘূর্ণায়মান প্রজেক্টাইলে এবং বাতাসের মধ্যে প্রতিক্রিয়ার কারণে হয়ে থাকে । ডান (ফিন) সংযুক্ত প্রজেক্টাইলে ড্রিফট ঘটে না।
১৩। স্ট্যাবিলিটি: একটি প্রজেক্টাইল তার সমতা বা ভারসাম্য অবস্থানে থাকার প্রবনতাকে স্ট্যাবিলিটি বলে । স্ট্যাবিলিটি ব্যতীত যে কোন প্রজেক্টাইল উল্টে যাবে এবং খুব অল্প দূরত্ব অতিক্রম করবে।
স্বয়ংক্রিয় ফায়ার সম্পর্কীয় সংজ্ঞা:
১। বাস্ট ফায়ার: একটি স্বয়ংক্রিয় হাতিয়ারে একবার ট্রিগার চাপদিলে যে কয়েকটি গুলি ফায়ার হয় তাকে এই বাস্ট ফায়ার বলে । এভাবে ক্রমান্বয়ে একবার করে ট্রিগার চেপে কয়েকবার বার্স্ট ফায়ার করা হয়।
২। কোন অব ফায়ার:
যখন একটি বাস্ট ফায়ার করা হয় তখন বুলেট একই পথ অতিক্রম করেনা । গুলির পার্থক্য, ব্যারেলের কম্পন ও পরিবর্তনশীল অবস্থার কারনে একটি বাস্টের প্রতিটি গুলির ট্রেজেক্টরি অপরটি থেকে ভিন্ন হয় । একটি মাত্র বাস্ট দ্বারা সৃষ্ট ট্রেজেক্টরি দলকে বলা হয় কোন অব ফায়ার ।
৩। বিটেন জোন: কোন অব ফায়ার ভূমিতে ছেদন করার ফলে সৃষ্ট লম্বা ডিম্বানুকৃতি নমুনাকে বিটেন জোন বলে । বিটেন জোনের মাঝখানে বুলেটের ঘনত্ব সবচেয়ে বশী। দূরত্ব বাড়ালে বিটেন জোন লম্বালম্বিভাবে এবং চওড়ায় বাড়ে।
৪। বিপদজনক জায়গা (ডেনজারাস এরিয়া):
বিটেন জোন এবং বিপদজনক স্থানের সম্মিলিত স্থানকে বিপদজনক জায়গা বলা হয় ।
৫। এনফিলেড ফায়ার:
এটি সামনাসামনি অথবা কোনাকুনি ফায়ার যাতে বিটেন জোনের লম্বা অক্ষ লক্ষ্যবস্তুর লম্বা অক্ষের সাথে মিলে যায়।
৬ । পার্শ্বস্থ ফায়ার সমর্থন: যে ফায়ার নিজেদের সৈন্যের পার্শ্ব থেকে নিজ অগ্রাভিযান বা আক্রমনের সুবিধার জন্য শত্রুর উপর দেয়া হয় তাকে পার্শ্বস্থ ফায়ার সমর্থন বলে।
৭ ৷ প্লাঞ্জিং ফায়ার: এটা ঐ সময় হয়ে থাকে যখন কোন উঁচু ভূমি থেকে নীচে অথবা কোন আকস্মিক খাড়া ভূমিতে ফায়ার করা হয় এবং যখন শত্রু ফায়ারের পর্দার নীচে দিয়ে চলাচল করতে পারে। এই ধরনের ফায়ারে বিপদজনক জায়গা শুধুমাত্র বিটেন জোনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে ।
৮। গ্রেজিং ফায়ার: এটা ঐ ধরনের ফায়ার যখন কোন অব ফায়ারের কেন্দ্র একটি দাঁড়ানো লোকের উচ্চতার উপরে দিয়ে যায় না।
৯। ওভার হেড ফায়ার (মাথার উপর দিয়ে ফায়ার): যে ফায়ার নিজেদের সৈন্যের মাথার উপর দিয়ে যায় তাকে মাথার উপর দিয়ে ফায়ার (ওভার হেড ফায়ার) বলে ।
১০। ডাইরেক্ট ফায়ার (প্রত্যক্ষ ফায়ার): একটি অস্ত্রকে ঐ সময় প্রত্যক্ষ ফায়ার করছে (ডাইরেক্ট ফায়ার) বলা হবে যখন সেটা সাইটের সাহায্যে শত্রুর উপর সরাসরি ফায়ার করে।
১১। ইন্ডাইরেক্ট ফায়ার (পরোক্ষ ফায়ার ): একটি অস্ত্রকে ঐ সময় পরোক্ষ ফায়ার করছে (ইন্ডাইরেক্ট ফায়ার) বলা হবে যখন সেটা প্রত্যক্ষ ফায়ার ছাড়া অন্য কোন কোন উপায়ে শত্রুকে ঘায়েল করার জন্য ফায়ার করে।
ট্যাংক বিধ্বংসী অস্ত্র এবং প্রোজেক্টাইল সম্পৰ্কীয় সংজ্ঞা:
১। রকেট : রকেট হচ্ছে একটি জেট দ্বারা সম্মুখে চালিত অস্ত্র, অপরিহার্যভাবে একটি ওয়ারহেড এবং পোপেলেন্ট ভর্তি নলের সমন্বয়ে গঠিত, যার এক প্রাপ্ত খোলা এবং অপর প্রাপ্ত শক্তভাবে আটা থাকে।
২। ভেনচুরি: একটি রকেটের পিছনের শেষ প্রান্তে অবস্থিত সংকুচিত ছিদ্রকে ভেনচুরি বলা হয়।
৩। ব্যাক ব্লাস্ট: সব ধরনের উন্মুক্ত ব্রিচ ট্যাংক বিধ্বংসী অস্ত্র হতে প্রোপেলেন্ট প্রজ্জলিত হবার সময় গ্যাস এবং অগ্নি শিখা পিছনের দিকে জোরে বের হয়, একে ব্যাক ব্লাষ্ট বলে।
৪। মাজেল বাস্ট: একটি রকেট লাঞ্চার ত্যাগ করার পর প্রোপেলেন্ট চার্জের যে সমস্ত অগ্নি শিখা এবং অদগ্ধ অংশ বিশেষ সমূহ মাজেল দিয়ে ছিটকিয়ে বের হয়ে আসে, তাকে মাজেল ব্রাস্ট বলে ।
বিবিধ সংজ্ঞা:
১। ব্যালিস্টিক: সাধারন অর্থে ব্যালিষ্টিক হচ্ছে প্রোজেষ্টাইলের গতির বিজ্ঞান।
(১) অভ্যন্তরীন ব্যালিস্টিক। প্রপেলেন্টের প্রজ্জথন থেকে মাজেল ত্যাগ করা পর্যন্ত ব্যারেলের মধ্যে প্রোজেক্টাইলের গতির বিজ্ঞানকে অভ্যন্তরীন ব্যালিস্টিক বলে ।
(২) বহিঃস্থ ব্যালিষ্টিক। মাজেল থেকে পয়েন্ট অব ইমপেক্ট বা পয়েন্ট অব বার্ষ্ট পর্যন্ত পোজেক্টাইলের গতির বিজ্ঞানকে বহিঃস্থ ব্যালিস্টিক বলে ।
২। ক্র্যাক: বুলেট বাতাসের মধ্যে অতিক্রম করার সময় ঘূর্ণায়মান গতির অন্য যে শব্দের সৃষ্টি হয় তাকে ক্র্যাক বলে।
৩। থাম্প: একটি অস্ত্র ফায়ার করার পর যে শব্দ হয় তাকে থাম্প বলে।
৪। মৃতভূমি (ডেড গ্রাইন্ড): ভূমির ঐ অংশকে মৃতভূমি বলে যেটা পর্যবেক্ষণের স্থান থেকে দেখা যায় না।
৫। আকাশ রেখা (স্কাই লাইন): এটা একটি কাল্পনিক রেখা যেখানে পর্যবেক্ষকের দৃষ্টিকোন থেকে ভূমি আকাশের সাথে মিশে যায়।
৬। ডেফিলেডেড পজিশন: এটা অস্ত্রের এমন একটি অবস্থান যা নিজের সামনে থেকে শত্রুর সমতল ট্রেজেক্টরি অস্ত্রের ফায়ার এবং দৃষ্টি থেকে প্রাকৃতিভাবে রক্ষিত অথবা আড়ালকৃত।
৭। সীমিত বিকল্প অবস্থান (অলটারনেটিভ পজিশন): এটা একটি অস্ত্রের আসল অবস্থান ছাড়া অন্য কোন একটি অবস্থান যেখান থেকে অস্ত্র তার একই দায়িত্ব অথবা দ্বিতীয় দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম ।
৮। নিরাপত্তা কোণ (সেফটি এ্যাঙ্গেল): নিরাপত্তা কোণ হচ্ছে ন্যূনতম পার্শ্বস্থ কোণ যা পার্শ্ববর্তী নিজস্ব সৈন্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রাখা হয় এবং যার বাইরে এইম নিয়ে ফায়ার করা হয়।
(১) প্রশিক্ষনের সময় – ৫ ডিগ্রি
(২) যুদ্ধে সময় – ৩ ডিগ্রি
(৩) নিজ তৈরী বাইপড/টাইপড় – ৭ ডিগ্রি
৯। স্নাইপার: একজন সম্পূর্ন প্রশিক্ষন প্রাপ্ত সৈনিক যে একজন লুকিয়ে থাকা শত্রুকে সুক্ষতার সাথে খুঁজে বের করতে সক্ষম এবং দ্রুত ও নিশ্চিত ভাবে তাকে আঘাত হেনে ধ্বংসকরতে সক্ষম।
১০। প্রাথমিক দায়িত্ব বা প্রাইমারি টাস্ক: একটি অস্ত্রকে ঐ সময়ে প্রাথমিক দায়িত্ব নিয়োজিত বলা হবে যখন, সেটাকে এমন ভাবে স্থাপন করা হয়েছে যে সেটা শত্রুর প্রধান আশমন পথ অন্তর্ভূক্ত করে সাথে সাথে প্রধান দায়িত্ব পালন করে।
১১। দ্বিতীয় দায়িত্ব বা সেকেন্ডারি টাস্ক: একটি অস্ত্র যখন তার প্রাথমিক দায়িত্বে নিয়োজিত না তখন সেটাকে এমন ঐাবে স্থাপন করা হয় যাতে সেটা শত্রুর হুমকির আশংকাজনক এই রকম আগমন পথ অন্তর্ভুক্ত করে দ্বিতীয় দায়িত্ব পালন করে।
১২। প্যারাপিট: এটা হচ্ছে অস্ত্রকে শত্রুর প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষন থেকে আড়াল করার জন্য ফায়ার পরীক্ষা বা ট্রেঞ্চে নির্মিত উচু করা ভুমি।
১৩। ডেফিলেডেড জোন: যখন কোন একটি উঁচু/নিচু ভূমির জন্য অথবা অন্য কোন বাধার কারনে কোন অব ফায়ারের একটি অংশ বাধাগ্রস্থ হয় এবং বিটেন জোনের একটি অংশে ফায়ার না লাগে এবং সেখানে একটি মৃত ভূমির সৃষ্টি হয় তখন সেই মৃতভূমির এলাকাকে ডেফিলেডেড জোন বলে।
উপসংহার
অস্ত্র প্রশিক্ষণে পারদর্শিতা আনতে হলে প্রত্যেক সৈনিকেরই জানতে হবে অস্ত্র সম্বীয় বিভিন্ন তথ্য এবং প্রজেক্টাইলের গতির বিজ্ঞান । কোন অস্ত্র কিভাবে ট্রেজেক্টরি গঠন করে এবং কোন ভূমিতে এর কার্যকারিতা কি রকম তা জানা থাকলে একজন সৈনিক সহজেই আঘাত হেনে শত্রুকে ধ্বংস করতে পারে।